ফাইবার গিগ র‍্যাংকিং এবং ইম্প্রেশন বাড়ানোর টিপস

ফাইবার গিগ র‍্যাংকিং এবং ইম্প্রেশন বাড়ানোর টিপস

বর্তমান সময়ে  ইনকাম করার জন্য ফ্রিল্যান্সিং একটি জনপ্রিয় মাধ্যম। অনলাইন থেকে ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকাম করা  সবাই মূলত ফাইবার মার্কেটপ্লেস এর নাম জানে।

ফাইবার বর্তমান সময়ে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস। ফাইবার থেকে প্রতি মিনিটে হাজার Buyer তাদের পছন্দের মতো Seller কে দিয়ে কাজ করিয়ে নিচ্ছে।

ফাইবার মার্কেটপ্লেস লক্ষ লক্ষ ফ্রিল্যান্সার যুক্ত রয়েছে। তারা তাদের স্কিল দিয়ে প্রতিনিয়ত অনেক টাকা/ডলার ইনকাম করছে।

ফাইবার মার্কেটপ্লেসে ককাজ করা সবার চাওয়া যাতে তাদের গিগ র‍্যাংকিং করে । যাতে তাদের গিগ প্রথমের দিকে অবস্থান করে।

একজন নতুন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে ফাইবার মার্কেটপ্লেসে আপনিও চাইবেন আপনার গিগ র‍্যাংক করুক। আপনার গিগ এর র‍্যাংকিং ও ইমপ্রেশন যত বেশি হবে আপনি তত বেশি কাজ পাবেন।

আজকের এই ব্লগে কীভাবে আপনার গিগ এর র‍্যাংকিং ও ইমপ্রেশন বাড়াবেন? কীভাবে বেশি বেশি অর্ডার পাবেন? তা নিয়ে এই ব্লগে আলোচনা করবো। তার সাথে কিছু টিপস শেয়ার করব, আশা করি আপনারা গিগ এর খুব তাড়াতাড়ি র‍্যাংকিং ও ইমপ্রেশন বাড়বে।

ফাইবার (Fiverr) কি?

ফাইবার হলো একটি অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস। এটি বিশ্বের জনপ্রিয় একটি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসের মধ্যে একটি।

ফাইবার একাউন্ট এর মাধ্যমে একজন বায়ার  একজন সেলার কে হায়ার করে এবং নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে কাজ করিয়ে নেয়।

আপনি যদি অনলাইনে কোনো কাজে দক্ষ হন এবং ফ্রিল্যান্সিং করতে চান তাহলে আপনি Fiverr.com এ কাজ করতে পারেন । Fiverr হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য একটি সেরা মার্কেটপ্লেস।

ফাইবার মার্কেটপ্লেসে দেশ-বিদেশের ভিন্ন বায়ার ও সেলার এক্টিভ থাকে। মূলত বায়ার বলা হয় তাদের যারা মার্কেটপ্লেস সেলার দ্বারা কাজ করিয়ে নেই এবং সেলার তাদের বলা হয় যারা বায়ারদের কাজ করে।

ফাইল গিগ (Fiverr Gig) কি?

ফাইবার গিগ হচ্ছে মূলত এক ধরনের সিভি। মার্কেটপ্লেসে একজন  সেলার তার সার্ভিস বিক্রির জন্য যে সুবিধা প্রদান করবে, বায়ার কে কতদিনের মধ্যে প্রজেক্ট জমা দিতে হবে, বায়ার সেলার কত টাকা/ডলার প্রদান করতে হবে, এইসব দিয়ে একটি সিভি তৈরি করা কে গিগ/ফাইবার গিগ বলে।

ফাইবার মার্কেটপ্লেস গিগ  একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গিগ তৈরি করতে খুব সচেতন থাকতে হবে। মনে রাখবেন একটি গিগ আপনার জীবন কে ঘুরিয়ে দিবে।

গিগ তৈরি করতে তাড়াহুড়ো না করে সময় নিয়ে সুন্দর করে তৈরি করা উচিত।

গিগ র‍্যাংকিং(Gig Ranking ) কি?

গিগ র‍্যাংকিং হচ্ছে মার্কেটপ্লেসে গিগ গুলো টপ পজিশনে থাকা। আপনার গিগ মার্কেটপ্লেস র‍্যাংক করতে অবশ্যই আপনাকে গিগ তৈরি করা ভালো ভাবে জানতে হবে। গিগ এর ইনফরমেশন ঠিক ভাবে দিতে হবে।

আকর্ষণীয় গিগ তৈরি করতে কী কী প্রয়োজন

অনলাইন মার্কেটপ্লেসে কাজ করার মাধ্যমেই হচ্ছে গিগ। গিগ ছাড়া মার্কেটপ্লেস কাজ করা অসম্ভব। তাই মার্কেটপ্লেসে কাজ করার জন্য গিগ একটি প্রয়োজনীয় বিষয়। এই গিগ এর মাধ্যমে আপনি মাসে লাখ লাখ টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

গিগ তৈরি করতে বেশি সময় নিয়ে গবেষণা করে একটি আকর্ষণীয় গিগ তৈরি করতে হবে, যাতে বায়ার গিগ দেখে হায়ার করতে বাধ্য হয়। চলুন জেনে নিই একটি আকর্ষণীয় গিগ তৈরি করতে কী কী প্রয়োজন:

একটি আকর্ষণীয় গিগ তৈরি করতে কী কী প্রয়োজন:

  • কম্পিউটার এনালাইসিস
  • গিগ এর জন্য SEO ফ্রেন্ডলি টাইটেল
  • ইউনিক ডেস্ক্রিপশন
  • গিগের প্যাকেজ
  • গিগের ট্যাগ
  • গিগের জন্য ছবি
  • গিগের জন্য ভিডিও
  • একটি সুন্দর Portfolio ওয়েবসাইট
  • কম্পিউটার এনালাইসিস

গিগ তৈরিতে কম্পিউটার এনালাইসিস একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আপনাকে মার্কেটপ্লেস এর ডিমান্ড অনুযায়ী সার্ভিস দিতে হবে ।

আপনি যে সার্ভিস দিবেন , এই সার্ভিসের প্রথম পেইজে যারা আছে তাদের গিগ এর সার্ভিস ফলো করবেন।

এখন ভাবছেন তাদের গিগ ফলো করতে হবে কেন। মনে রাখবেন এরা মার্কেটপ্লেস এ  টপ পজিশনে আছে মানে তাদের গিগে কিছু না কিছু আছে।

প্রত্যেকটি গিগ সময় নিয়ে দেখবেন গিগ এর টাইটেল, ডেস্ক্রিপশন, গিগের প্যাকেজ,গিগের ট্যাগ, গিগের ইমেজ/ভিডিও ইত্যাদি ভালোভাবে দেখে আপনার গিগ তৈরি করবেন।

আরো পড়ুন : মোবাইল দিয়ে সহজেই অনলাইন ইনকাম

ফাইবার গিগ এর SEO

ফাইবার গিগ র‍্যাংকিং এর গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে SEO।

SEO করলে আপনার গিগ টপ পজিশনে থাকবে। SE0 করার জন্য আপনার যে স্কিল আছে বা আপনি যে স্কিল দিয়ে কাজ করবেন।

ঐ স্কিল Related Keyword রিসার্চকরে। আপনার টার্গেট Keyword অপটিমাইজ করে গিগ এ বসাতে হবে।

উপযুক্ত ট্যাগ

ট্যাগ গিগের জন্য প্রয়োজনীয় একটি বিষয়। ট্যাগ গিগ এ SEO Related Keyword  হিসেবে কাজ করে।

আপনা যে স্কিল এর জন্য গিগ এই স্কিল এর উপর ট্যাগ লেখা।

SEO ফ্রেন্ডলি গিগ টাইটেল

গিগ‌ তৈরিতে টাইটেল একটি মেইন বিষয়। কেননা গিগ এর ফোকাসে এ টাইটেল থাকে। SEO এর মাধ্যমে কিওয়ার্ড রিসার্চ করে গিগ এর টাইটেলে বসাতে হবে।

কারন কেউ যখন এই কাজের বিষয়ে সার্চ করবে তখন আপনার টাইটেল এর জন্য আপনার গিগ প্রথম পেইজে‌ শো করবে।

তাহলেই ভাবুন SEO ফ্রেন্ডলি গিগ টাইটেল আপনার গিগ এর কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

গিগের জন্য আকর্ষণীয় ছবি

প্রত্যেক বায়ার আপনার গিগ এর টাইটেল দেখার পর আপনার গিগ এর ছবিটি দেখবে। আপনার গিগ এর ছবি যদি ভালো লাগে তাহলে আপনার গিগ এ ক্লিক করবে।

তাহলে আপনার গিগ এর জন্য অবশ্যই আপনাকে একটি আকর্ষণীয় ছবি তৈরি করতে হবে। আপনি চাইলে একজন ভালো গ্ৰাফিক্স ডিজাইনার কে দিয়ে তৈরি করতে পারেন অথবা আপনি নিজেই Photo Editor App দিয়ে তৈরি করতে পারেন যেমন: Canva.com , PicsArt ইত্যাদি।

গিগের জন্য আকর্ষণীয় ভিডিও তৈরি

ফাইবার গিগ তৈরিতে কিছু নিয়ম আছে এই নিয়মটিই বলে দেয় আপনার গিগের ছবি থেকে ভিডিও দিলে বেশি Rank করে।

তাই ভালো হয় একটি গিগ তৈরিতে ছবি থেকে ভিডিও বেশি কার্যকারি। আপনি ভিডিও Canva App, CapCut, Inshot থেকে তৈরি করতে পারেন।

ভিডিও তে আপনি কি ধরনের সার্ভিস দিয়ে থাকেন, তা ভালো করে এক্সপ্লেইন করবেন। আপনার স্কিল কেমন, আপনি কেমন কাজ পারেন তার ডেমো। এসব বিষয় তুলে ধরবেন।

ফাইবার একাউন্ট প্রোফাইল

বায়ার আপনার গিগ দেখার পর অনেক সময় আপনার প্রোফাইল দেখবে। আপনার প্রোফাইল অনেক সময় নিয়ে সুন্দর ভাবে তৈরি করতে হবে।

আপনার কী কী কাজের স্কিল আছে কী কী কাজের সার্ভিস দিবেন। ঐ সব বিষয়ে প্রোফাইলে লিখবেন। আপনাকে নিয়ে লিখবেন। আপনার প্রোফাইলে আপনার একটি স্মার্ট ও সুন্দর ছবি দিবন।

আপনার যে যে কাজের স্কিল এই বিষয়ের কিওয়ার্ড রিসার্চ করে দিবেন, এতে আপনার একাউন্টি বায়ার কে আকর্ষণ করবে।

পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট

পোর্টফোলিও ওয়েবসাইটে বলতে বুঝায় আপনার স্কিল ও আপনার কাজের টেমপ্লেট থাকবে।

একটি পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট থাকলে বায়ার আপনাকে হায়ার করতে আরো আগ্রহ হবে। এবং একটি বিশ্বাস থাকবে যে একজন ভালো দক্ষ সেলার কে কাজ দিয়েছে।

এক্টিভ থাকা

আপনি সবই করলেন কিন্তু আপনি ফাইবারে এক্টিভ থাকলেন না তাহলে কোনো লাভ হবে না। আপনার গিগ র‍্যাংকিং এবং ইম্প্রেশন কোনো টা হবে না।

তাই আপনার উচিত নিয়মিত ফাইবার একাউন্ট এ এক্টিভ থাকা। এতে আপনার ফাইবার একাউন্ট এর গিগ দ্রুত র‍্যাংকিং এবং ইম্প্রেশন হবে। এবং আপনি বেশি বেশি অর্ডার পাবেন।

ব্রিফ ম্যাচ

অনেক সময় বায়ার তার কাজের জন্য একটি ব্রিফ লেখে। ব্রিফটি আপনার কাজের সাথে মিল হলে ফাইবার থেকে একটি Notification আসবে আপনার একাউন্ট এ।

আপনি এইসব কাজের জন্য বায়ার এর কাছে এপ্লিকেশন করতে পারেন। বায়ার এর কাজ করে দিতে পারলে, বায়ার আপনাকে হায়ার করবে।

সময় মতো ডেলিভারি

তখন আপনি এখটি কাজ করবেন তখন বায়ার আপনাকে একটি সময় দিবে এই সময়ের মধ্যে আপনাকে কাজটি জমা দিতে হবে।

আপনি যদি সঠিক সময়ের মধ্যে কাজ জমা না দিতে পারেন। তাহলে ফাইবার থেকে আপনার একাউন্ট Repotesion ডাউন করে দিবে। এতে আপনার অর্ডার পাওয়া চান্স কম।

FAQ’S

প্রশ্নঃ ফাইবার গিগ কি ?

উঃ ফাইবার একটি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে , যেখানে ফ্রিল্যান্সিংরা বিভিন্ন ধরনের সেবা দেয়। প্রতিটি ফ্রিল্যান্সিং যে সেবা দেয় তাকে ফাইবার গিগ বলে।

প্রশ্নঃ ফাইবার গিগ ইমেজ সাইজ কত?

উঃ ফাইবার গিগ ইমেজ সাইজ হলো: 1280×769 px

শেষ কথা

আশা করি উপরোক্ত ব্লগ টি আপনার জন্য উপকৃত হবে। উপরোক্ত নিয়ম মেনে চললে আপনার গিগ এর র‍্যাংকিং এবং ইম্প্রেশন অবশ্যই বাড়বে।

মনে রাখবেন বর্তমান সময়ে ফাইবার মার্কেটপ্লেসে সেলার এর প্রতিযোগিতা বেশি তাই আপনাকে কাজ পেতে বেশী দক্ষ হতে হবে।

ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।

ধন্যবাদ।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *